Type Here to Get Search Results !

প্রশ্ন-উত্তরপত্র দাখিলের নির্দেশ দিয়ে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে হাইকোর্টের রুল

0
- নিজস্ব প্রতিবেদক 

সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস  প্রথম বর্ষে (২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না,সেটা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র আদালতে দাখিল করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না সেই মর্মেও রুল জারি করেছেন আদালত।
উল্লেখ্য,রোববার(২৯ আগস্ট)২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ত্রুটিপূর্ণ দাবি করে ফলাফল বাতিল চেয়ে ১৯৫ ভর্তিচ্ছুর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন। স্বাস্থ্যসচিব, শিক্ষাসচিব ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ পাঁচ বিবাদীকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব উক্ত আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারস্টার নওরোজ মো. রাসেল।

উল্লেখ্য,চলতি বছরের ৪ এপ্রিল ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। জাতীয় মেধার ভিত্তিতে সরকারি ৩৭টি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য ৪ হাজার ৩৫০ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করা হয়। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৪৮ হাজার ৯৭৫ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৩৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ক্রটিপূর্ণ উল্লেখ করে ওই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে নতুন মেধাতালিকায় ভর্তি চেয়ে ৩২৪ শিক্ষার্থী গত ১৯ মে রিট করেন।

শুনানি নিয়ে ২৭ মে হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ নিয়ে রিটটি নিষ্পত্তি করে দেন। সেদিন আদালত বলেন, ফলাফল বিষয়ে অভিযোগ থাকলে কোনো পরীক্ষার্থী স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে কারণ উল্লেখ করে আবেদন করতে পারবেন। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে তা জানাবেন। আর তথ্য গোপন করে ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনো শিক্ষার্থী অংশ নিলে এবং তা চিহ্নিত হলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর ভর্তি তৎক্ষণাৎ বাতিল হবে।
এরপর ৩২৪ শিক্ষার্থীর মধ্য ১৯৫ শিক্ষার্থী নতুন করে ১৭ আগস্ট আরেকটি রিট করেন, যা আজ শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

এ ব্যাপারে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, "ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। প্রথম রিটে যাঁরা আবেদনকারী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ১৯৫ জন দ্বিতীয় রিটটি করেন। কেননা আগের রিটের প্রেক্ষিতে তাঁরা ভর্তির ফলাফলে ত্রুটি উল্লেখ করে প্রতিকার চেয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ১৯৫ শিক্ষার্থীর আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন, তবে শিক্ষার্থীর ভর্তির বিষয়ে কোনো কাঙ্ক্ষিত প্রতিকার পাননি। তাই রিটটি করা হলে আদালত ওই রুল দেন।"

এছাড়াও,তারও আগে গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে অসংখ্য ভুল ও বড় ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তাহলে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭.৫ নম্বর কর্তন করা হবে। আবার কোনো পরীক্ষার্থী যদি আগের বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে।
কিন্তু প্রকাশিত ফলাফল থেকে দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রতিপালন করা হয়নি। যেসব পরীক্ষার্থীর ৭.৫ নম্বর কর্তন করার কথা সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কর্তন করা হয়েছে। ফলে ওই পরীক্ষার্থীদের ২.৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আবার প্রথমবার পরীক্ষায় যেখানে কোনো নম্বর কাটার কথা নয় সেখানে অনেক পরীক্ষার্থীর ৫ নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।

রিটে আরও বলা হয়, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দুটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল দুটি করে। একই সঙ্গে অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না। সংরক্ষিত জেলা ও উপজাতি কোটার আসন পূরণেও ব্যাপক অসঙ্গতি রয়েছে।

Post a Comment

0 Comments

Top Post Ad

Below Post Ad