দেশে পাবজি, ফ্রি-ফায়ার এর মত জনপ্রিয় ও ক্ষতিকর অনলাইন গেমস বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়াও এইরকম সব ক্ষতিকর অনলাইন গেমস বন্ধের পাশাপাশি টিকটক, লাইকি, বিগো ইত্যাদি অ্যাপও কেনো বন্ধ করা হবে না জানতে চেয়ে হাইকোর্টে রুল জারি করা হয়েছে।
আজ সোমবার (১৬ আগস্ট) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে, গত ২৪ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মানবাধিকার সংগঠন ‘ল অ্যান্ড লাইফ’ ফাউন্ডেশনের পক্ষে গেম এবং অ্যাপগুলোর ক্ষতিকারক দিক তুলে জনস্বার্থে একটি রিটটি করেন সুপ্রিমকোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও মোহাম্মদ কাউছার।
মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন,"ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষাসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিবাদীদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।"
উক্ত রিটে বলা হয়, "পাবজি ও ফ্রি ফায়ারের মতো গেমে দেশের যুবসমাজ ও শিশু-কিশোরেরা আসক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা–সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়ে পড়ছে মেধাহীন। অন্যদিকে টিকটক ও লাইকির মতো অ্যাপ ব্যবহার করে দেশের শিশু-কিশোর ও যুবসমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। দেশে কিশোর গ্যাংয়ের সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি নারী পাচারের ঘটনা এবং দেশের বাইরে টিকটক, লাইকি ও বিগো লাইভের মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়েছে, যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক, দেশের জনস্বার্থ, শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধের পরিপন্থী।"
পরে গত ১ জুলাই এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য কঠোর লকডাউনের পর পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য আজকের দিন ঠিক করেছিলেন হাইকোর্ট।
এছাড়া অনলাইন গেমগুলো বন্ধের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে সুপারিশও করা হয়েছে। এতে গেমগুলোর ক্ষতিকর দিয়ে নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়।
চায়না প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালে তৈরি করা যুদ্ধ গেম ফ্রি ফায়ার একইভাবে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে করোনা মহামারির ফলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা এসব গেমে আসক্ত হচ্ছে।ফলে,ফ্রি ফায়ার গেমটি ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক ডাউনলোড করা মোবাইল গেম। ওই বছর গুগল প্লে স্টোরের সেরা জনপ্রিয় ভোট গেমের জন্য পুরস্কার পায় এই ফ্রী ফায়ার গেমটি।
অপরদিকে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুক দিয়ে মুসলমানদের হত্যা এবং সেই দৃশ্য ফেসবুকে লাইভের বিষয়টি পাবজির সঙ্গে তুলনা করেন অনেকে। নেপালে সম্প্রতি পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। ভারতের গুজরাটেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।বাংলাদেশেও পাবজি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল, পরে আবার চালু করা হয়।