করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও প্রথম দুই মাসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের কোন পরীক্ষা নেয়া হবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।
এই সময়কালে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা ও সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে।
অন্যদিকে, সরকার ইতিমধ্যে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।কিন্তু, সেই হিসেবে এই দুটি পরীক্ষাও দুই মাস পরেই অনুষ্ঠিত হবে
সম্প্রতি প্রকাশিত মাউশির গাইডলাইনে দেখা গেছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান পরিচালনা বিধিমালার মধ্যে ১৯টি নির্দেশনা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে কোনো ধরনের পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করা যাবে না।
এছাড়াও প্রথম এক বা দুই সপ্তাহ পাঠ্যক্রমভিত্তিক শিখনের ওপর গুরুত্ব না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ ও সে বিষয়ে প্রত্যেক শ্রেণির শ্রেণি শিক্ষকদের জানানোর জন্য যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য জারি করা সরকারের বিধিমালায় বলা হয়েছে,'শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ার চাপ কমাতে এসম সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।' পাশাপশি,এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রত্যেক শ্রেণির শ্রেণিশিক্ষকদের অবহিতকরণের জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা খুবই কম সময় পাবে। এছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি বাদে অন্য কারো সংক্ষিপ্ত সিলেবাসও করা হয়নি। তাই এই সময়ে তাদের সিলেবাস কোনোভাবেই শেষ করা যাবে না।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, "চলতি বছরের মার্চে স্কুল খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ঐ সময়ে গত বছরের সিলেবাস নিয়ে একটি রেমিডিয়াল প্যাকেজ তৈরি করেছিল এনসিটিবি। আমি মনে করি, গত বছরের সিলেবাস থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে তৈরি ঐ রেমিডিয়াল প্যাকেজ শিক্ষার্থীদের পড়তে হবে। ওইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না জানলে ভবিষ্যতে ঐ বিষয়ের ওপর অনীহা তৈরি হবে।"
তিনি আরও বলেন, "চলতি শিক্ষাবর্ষের যে সময় আছে তাতে এই প্যাকেজ শেষ করা সম্ভব নয়। এ কারণে চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে। পৃথিবীর অনেক দেশে এমন উদাহরণ আছে।"
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার গাইডলাইনে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে।সেখানে বলা হয়েছে,' তিন ফুট দূরত্বে ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলো স্থাপন করতে বলা হয়েছে। পাঁচ ফুটের কম দৈর্ঘ্যের একজন শিক্ষার্থী এবং পাঁচ থেকে সাত ফুট দৈর্ঘ্যের বেঞ্চে দুজন শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাইডলাইন অনুসারে ক্লাস করতে পারবে।' এছাড়াও,স্কুলে ঢোকার আগেই থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষার কথাও বলা হয়েছে।
গাইডলাইনে আরও বলা হয়, 'সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বেঞ্চের দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুটের কম হলে প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসতে পারবে। যদি বেঞ্চের দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুট বা তার বেশি হয়, তবে প্রতিটি বেঞ্চে দুজন করে ছয়টি বেঞ্চে ১২ জন শিক্ষার্থী বসতে পারবে।'