এশিয়ার নোবেল হিসেবে পরিচিত র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার এশিয়ার নোবেল হিসেবে পরিচিত। এ বছর সেই পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী। তিনি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে ফিলিপাইন থেকে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। র্যামন ম্যাগসেসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞানী ফিরদৌসী কাদরী ছাড়াও এ বছর পাকিস্তানে দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখায় দেশটির অন্যতম বৃহৎ এক ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান মোহাম্মদ আমজাদ সাকিব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাস্ত্যুচুত শরণার্থীদের জীবন পুনর্গঠনে কাজ করা স্টিভেন মুনচি-ও এই পুরস্কার পেয়েছেন।
বিজ্ঞানী ফেরদৌসী কাদরী কলেরার টিকা নিয়ে গবেষণা ও সাশ্রয়ী দামে টিকা সহজলভ্য করে লাখো প্রাণ রক্ষায় কাজ করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিকাবিষয়ক বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি। পুরস্কার ঘোষণার সময় র্যামন ম্যাগসেসে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘লাখো মানুষের উপকারে টিকার উন্নয়নে তাঁর নিবেদিত ভূমিকার জন্য’ এই পুরস্কার দেওয়া হলো।
ফিরদৌসীর প্রধান গবেষণার বিষয় হলো অন্ত্রের রোগ। বিশেষ করে ইমিউনোলজি, জিনোমিক্স, প্রোটোমিক প্রযুক্তি এবং ডায়াগনস্টিকস ও ভ্যাকসিনে উন্নতি সাধন। তিনি বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের জন্য নতুন ধরনের স্বল্পদামের কলেরা টিকা উন্নয়নে কাজ করেছেন। তিনি ব্যয়বহুল ‘ডকোরাল’ টিকার পরিবর্তে ‘শানকল’ নামক একটি টিকা ঢাকায় ব্যবহার করে সফলতা লাভ করেন। পরবর্তীতে টিকাটি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
ড. ফেরদৌসী কাদরী ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও আণবিক জীববিদ্যা বিভাগ থেকে বিএসসি ও ১৯৭৭ সালে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন/প্রতিষেধকবিদ্যা বিভাগ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। আইসিডিডিআর,বি’র প্রতিষেধকবিদ্যা বিভাগ থেকে পোস্টডক্টরাল গবেষণা শেষ করার পর, তিনি একই প্রতিষ্ঠানে ১৯৮৮ সালে সহযোগী বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দেন। পরে তিনি একই প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী এবং মিউকোসাল ইমিউনোলজি ও ভ্যাকসিনোলজি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
উন্নয়নশীল দেশে শিশুদের সংক্রামক রোগ চিহ্নিতকরণ ও বিস্তার রোধে প্রাথমিক চিকিৎসা কার্যক্রম ও টিকাদান কর্মসূচি জোরদারে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ২০২০ সালে তিনি ‘লরিয়েল-ইউনেস্কো উইমেন ইন সায়েন্স অ্যাওয়ার্ড’(এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল) লাভ করেন।