শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা নেওয়ার শর্তে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন। ক্যাম্পাস খোলার আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে নীতিমালাও প্রণয়ন করেছে। তারা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট হলে অবস্থান করবেন। যাদের ছাত্রত্ব নেই, তারা কোনোভাবেই অবস্থান করতে পারবেন না। এছাড়া হলে কোনো গণরুম থাকবে না।
বুধবার(১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ক্যাম্পাস খোলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুম ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হবে। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে হল প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নতুন এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন 'করোনা বলে নয়, স্বাভাবিক সময়েও গণরুম তাদের জন্য অভিশাপ। গণরুমের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা। নতুন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন সুফল বয়ে আনবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।'
এছাড়াও,ঢাবির হল খোলার প্রস্তুতি এবং গণরুমের বিষয়ে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, "হলগুলোতে এখন আর গণরুম থাকবে না। উপাচার্য স্যারের নেতৃত্বে প্রভোস্ট কমিটি একটি নীতিমালা করেছে। আর কোনো শিক্ষার্থী ফ্লোরে ঘুমাবেন না, অবশ্যই নির্ধারিত একটি খাট থাকবে। গণরুমে কোনো শিক্ষার্থী থাকবে না। মানসম্পন্ন রুমগুলোতে আমরা তাদের জন্য সিট বরাদ্দ দিয়ে রেখেছি। হল খোলার পর এ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী দিলুয়ারা বেগম বলেন, "গণরুম আমাদের জন্য এক ধরনের অভিশাপ। কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে গণরুমে বসবাস করা সম্ভব নয়। হল খোলার পর গণরুম না রাখার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে যৌক্তিক ও প্রশংসনীয়। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ই্স্রাফিল আল-আলামিন বলেন, গণরুমে পড়াশুনার পরিবেশ নেই। তাছাড়া অস্বাস্থ্যকর অবস্থা তো রয়েছেই। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীদের গণরুমে না রাখার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী বাবুল চন্দ্র দাস বলেন, গণরুম না রাখার সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। বিশ্ববিদ্যালয় যদি গণরুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে পারে।"
ঢাবির শিক্ষার্থীর মনে করেন হলে গণরুম বন্ধ অবশ্যই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। তবে বাস্তবতাও দেখতে হবে। গত দেড় বছরে ছাত্রদের জন্য হলে নতুন করে কোনো সিট না বাড়িয়ে, কোনো সমাধান না দিয়ে এ সিদ্ধান্ত আবেগের বসে নেওয়া। আবাসন সংকট সমাধান না হলে শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ করে নিজেরাই নিজেদের প্রয়োজনে গণরুম তৈরি করবেন।